কামারপুকুরের সেরা মিষ্টি শ্রীরামকৃষ্ণদেবের প্রিয় সাদা বোঁদে

সাদা বোঁদে না জিলিপি কে হবে কামারপুকুর সেরা মিষ্টি এই নিয়ে একটি জনমতের আয়োজন করে কামারপুকুর আমার শহর ফেসবুক পেজ।এই লড়াইয়ে প্রথমে পিছিয়ে থাকলেও এক তুড়িতে কামারপুকুরের সেরা মিষ্টির শিরোপা ছিনিয়ে নিল সাদা বোঁদে।এই জনমতে অংশগ্রহন করেছিলেন ১০৩৩ জন।যেখানে প্রায় ৭০ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয় সাদা বোঁদে।

প্রসঙ্গত সাদা বোঁদে আর জিলিপি দুটি মিষ্টিই কামারপুকুরের মানুষ ও পর্যটকদের মন কেড়ে নেয়।সাদা বোঁদের ক্ষেত্রে প্রথমেই মানুষ চমকে ওঠে তার নামে,” বোঁদে তাও আবার সাদা, সে আবার হয় নাকি?” তারপর কামারপুকুরের সাদা বোঁদে তাদের ভুল ভাঙাই।

কামারপুকুর ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনো জায়গায় পাওয়া যায় না এই সাদা বোঁদে।এবার আসি জিলপির কথায়।তথাকথিত লাল জিলিপি নয়,বরং কিছুটা সাদা আর লাল রঙে মেশানো বিড়ি কলাইয়ের জিলিপি কামারপুকুরে বিখ্যাত।

সাদা বোঁদে কে প্রথম তৈরী করেন তা জানা যায়নি।তবে ১২০০ বঙ্গাব্দে প্রথম কামারপুকুরে এটি তৈরী হয়।তখন মধুসূদন মোদক এই সাদা বোঁদে তৈরি করতেন।বালক গদাই ছিলেন মধুসূদন বাবুর ছেলে দুর্গাদাসের বন্ধু।তাই বন্ধু বাড়িতে গেলেই তিনি সাদা বোঁদে খেতেন।তার পরবর্তীকালে সত্যকিঙ্কর মোদক(সত্য ময়রা) ভালো সাদা বোঁদে বানাতেন।মা সারদা সত্য ময়রার বানানো সাদা বোঁদে খেতে খুব ভালোবাসতেন।

সাদা বোঁদে তৈরি হয় আতপ চালের গুঁড়ি আর রমার বেসনের মিশ্রণে। তারপর ছোট ছোট দানা তৈরি করা হয়।ঘিয়ে ভাজার পর চিনির রসে ডুবিয়ে  তৈরি হয়ে যায় সাদা বোঁদে। তবে ভালো সাদা বোঁদের জন্য এখনও কামারপুকুরে ঢেঁকিতে গুঁড়ো করা হয় আতপ চাল।এই বোঁদের আর এক বৈশিষ্ট্য এর আয়ু। প্যাকেটে ভরে রাখলেও এক মাস ভাল থাকবে।

ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণদেবের প্রতিদিনের প্রসাদেও থাকে এই সাদা বোঁদে।তাছাড়া ঠাকুর জিলিপি খেতেও খুব পছন্দ করতেন ।তিনি বলেন — ” আমার গলা পর্যন্ত পূর্ণ আর একটি সর্ষপ পরিমাণ দ্রব্যেরও ভিতরে প্রবেশ করিবার পথ নাই। তবে জিলিপির পথ হবে জিলিপি হলে একখান খাইতে পারি “।

তবে ফেসবুক পোলের এই লড়াইয়ে বিজয়ী হল সাদা বোঁদে। এই মিষ্টির স্বাদ নিতে গেলে আপনাকে আসতেই হবে পুন্যধাম কামারপুকুরে।
কামারপুকুরের পর্যটকদের সুবিধার জন্য দেখে নিন এই ওয়েবসাইটটি : www.kamarpukurjayrambati.com

প্রতিবেদক : সৌমিক লাহা
তথ্য কৃতঞ্জতা : আজকাল পত্রিকা, আনন্দবাজার পত্রিকা।

3 Responses